Monday, October 8, 2018

মেহেদী পাতা প্রকৃতির অনবদ্য দান

মেহেদী পাতা

মেহেদির ওপর নাম হেনা. হেনা মানব সমাজের জন্য এক প্রকৃতির অনবদ্য দান। হেনার ভেষজ গুনাগুন সহস্র বর্ষের প্রাচীন। এর রয়েছে এন্টিফাঙ্গাল, এন্টি-ইনফ্লেমেটরী, কুলিং ও হিলিং, এন্টিইরিটেন্ট ও সিডেটিভ গুণাগুণ।
অত্যান্ত উপকারি ভেষজ হেনার পাতা ও ফুল হতে আহরিত তেল অনেক চর্ম -মলম তৈরির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। চামড়ায় ক্ষত, পোড়া ও চামড়ার ফ্যাকাসে হলুদ দাগ চিকিৎসায় অত্যান্ত কার্যকরী ঔষধ হিসাবে ব্যবহার হয়। স্কেবিস, চর্মের চুলকানি জাতীয় ও নখের ফাটার চিকিৎসায় হেনা পেস্ট ব্যবহার হয়। দেহ হতে পানি হ্রাস প্রতিরোধ করে; আবার ময়েশ্চার ধারণের ফলে কোন অঙ্গ স্ফিতীর রোধে এক প্রকার ডিসল্‌ভিং ফ্যাক্টর গঠনে কাজে লাগে। মাথাব্যাথা, জ্বর ও ভিটামিন-বি এর ঘাটতি জনিত পায়ের পাতার জ্বালা-পোড়ার ক্ষেত্রে দেহের তাপমাত্রা কমিয়ে স্বস্তি প্রদান করতে পারে। মাথার টাকের চিকিৎসার সহায়ক। হেনার পাতা দিয়ে গরম করা সরিষার তেল চুলের স্বাস্থ্যবান বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে। এক্ষেত্রে ২৫০ গ্রাম সরিষার তেল একটি পাত্রে সিদ্ধ করার সময় ৬০ গ্রাম হেনা পাতা ক্রমান্বয়ে যোগ করা হয়; তারপর একটি কাপড় দিয়ে ছেঁকে বোতলে সংরক্ষণ করা হয়। আমাশয়ের চিকিৎসায় এর বীজের পাওডারের সাথে ঘি মিশিয়ে সেবন করা যায়। লিভারের বিভিন্ন জটিলতা যেমন- লিভারের বৃদ্ধি ও জন্ডিসের চিকিৎসায় এর বাকল ব্যবহার করা যায়। এর ফুলের পেস্টের সাথে ভিনেগার মিশিয়ে কপালে প্রয়োগ করলে রৌদ্রজনিত কারণে মাথা ব্যাথার উপশম হয়। গলা ব্যাথা উপশমে হেনা পাতা দিয়ে গরম করা পানি দিয়ে কুলকুচা করা যায় বা আক্রান্ত স্থানে প্রয়োগ করা যায়। অস্থির জোড়ায় প্রদাহ, ফোলা ও থেতলে যাওয়া অঙ্গে পাতার পেস্ট স্থানীয়ভাবে প্রয়োগ করা যায়।

মেহেদি তেল বাত এবং বাতজনিত সব রকম ব্যথা দূর করতে বেশ কার্যকর। ব্যথার স্থানে মেহেদি তেল ম্যাসাজ করে লাগিয়ে নিন। ভাল ফল পেতে এটি প্রতিদিন এক থেকে দুই মাস করুন।

মেহেদি পাতা ভিনেগারে ভিজিয়ে এক জোড়া মোজার ভিতরে রেখে দিন। এবার এই মোজাটি পায়ে সারারাত পরে থাকুন। এটি পায়ের জ্বলাপোড়া কমিয়ে দিবে অনেকখানি। মেহেদি গাছের ফুল মাথা ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। মেহেদি গাছের ফুল পেস্ট করে এর সাথে ভিনেগার মিশিয়ে নিন। 

এটি কপালে অথবা ব্যথার স্থানে লাগিয়ে রাখুন। এছাড়া আপনি মেহেদির পেস্টও ব্যবহার করতে পারেন। মেহেদির পেস্ট পিঠ, ঘাড় এবং ঘামাচি আক্রান্ত অন্যান্য স্থানে লাগান। এটি ঘামচির চুলকানি এবং জ্বালাপোড়া হ্রাস করতে সাহায্য করবে। এই মেহেদি দিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন, মাউতওয়াশ। মেহেদি পাতা গুঁড়ো পানিতে গুলিয়ে নিন। 

এবার এটি দিয়ে কুলকুচি করুন। এটি মুখের ঘা দ্রুত ভাল করে থাকে এবং মুখ জীবাণুমুক্ত করে তোলে। খুশকি দূর করতে মেহেদি বেশ কার্যকরী। সরিষা তেল, মেথি, মেহেদি পাতা সিদ্ধ একসাথে যোগ করে এটি চুলে ব্যবহার করুন। ১ ঘন্টার পর শ্যাম্পু করে নিন। এটি খুশকি দূর করে চুলকে করে তুলবে ঝলমলে সুন্দর। পুরোনো ক্ষত, যেগুলো বারবার ফিরে আসে, এসব ক্ষত সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে মেহেদি। মেহেদিপাতা বেটে এ রকম ক্ষতে লাগিয়ে রাখুন। পানি পচা রোগ সাধারণত নোংরা, জীবাণুযক্ত পানি লেগে এই রোগ হয়। আবার দীর্ঘক্ষণ পানিতে কাজ করলেও এ রোগ হতে পারে। এতে আঙুলের মাঝের অংশে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। 

এই ক্ষতে মেহেদির প্রলেপ লাগিয়ে রাখলে ঘা ভালো হয়ে যায়। বলিরেখা দূর করতেও মেহেদির তুলনা নেই। ভাবছেন ত্বক লাল হয়ে যাবে কি না? মুখের ত্বকে মেহেদি ব্যবহারের নিয়মটি পুরো আলাদা। আপনার প্রতিদিনের ফেসপ্যাকে মিশিয়ে নিন কয়েক ফোঁটা মেহেদিপাতার রস। আর ফেসপ্যাক ১০ মিনিটের বেশি রাখবেন না। নিয়মিত ব্যবহারে বলিরেখা হবে বিলম্বিত।
শীতকালে তো পা হরদম ফাটে। তবে কারো কারো বারো মাস পা ফাটার সমস্যা থাকে। এছাড়া চামড়া ওঠার সমস্যাও থাকে অনেকের। মেহেদিপাতা বেটে ফাটা জায়গায় পুরু প্রলেপ দিয়ে রাখুন। আধা ঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে পা ফাটা প্রতিরোধ হবে।

ফেসবুক থেকে

No comments:

Post a Comment

Copyright © স্বাধীন নিউজ

Canvas By: Fauzi Blog Responsive By: Muslim Blog Seo By: Habib Blog