Saturday, December 29, 2018

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হুমকি তালেবানের!

সংগৃহীত
সিরিয়ার মতো পুরোপুরি না হলেও, আফগানিস্তান থেকে অর্ধেক সেনা সরানোর ইঙ্গিত দিয়েছে আমেরিকা। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্য, আফগানিস্তানেও ১৪ হাজার সেনা রাখার কোনো প্রয়োজন নেই। প্রথমে সরাসরি এ নিয়ে মুখ না খুললেও, কাল বোমা ফাটিয়েছে আফগান তালেবান। তাদের হুমকি, আফগানিস্তান থেকে এখনই পাততাড়ি না গোটালে, আশির দশকে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের মতোই হাল হবে আমেরিকার।

সিরিয়া থেকে সেনা তুলে নেয়ার সিদ্ধান্তে ঘরে-বাইরে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন ট্রাম্প। মতের মিল না হওয়ায় ইস্তফা ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব জিম ম্যাটিস। ট্রাম্পের প্রশাসন তবু এক পাও পিছু না হটে জানিয়ে দেয়, সেনা সরানো হবে আফগানিস্তান থেকেও। এতে ভারতের উপর নিরাপত্তাজনিত চাপ বাড়বে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। মার্কিন সেনা কমলে জঙ্গিরা শুধু আফগানিস্তানে নয়, পাকিস্তান, এমনকি কাশ্মীরেও নতুন করে হানা দেওয়ার সুযোগ খুঁজবে বলে মনে করছে নয়াদিল্লি। ভারতকে তাই নিজের যুদ্ধ নিজে লড়ার জন্য তৈরি থাকার পরামর্শও দিচ্ছেন অনেকে।

প্রায় এক দশক আফগানিস্তানকে নিজেদের দখলে রাখার পরে, ১৯৮৯-এ সেনা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছিল তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন। গৃহযুদ্ধে টালমাটাল সেই সময়েই তালেবান-সব বেশ কয়েকটি জঙ্গি গোষ্ঠীর উত্থান হয় আফগানিস্তানে। তার পর আড়েবহরে বাড়তেই থাকে তালেবান। প্রথমে আমেরিকা বিশেষ নাক গলায়নি। কিন্তু ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর পেন্টাগন এবং ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পরেই আল কায়দা নেতা ওসামা বিন লাদেনের খোঁজে আফগানিস্তানের সঙ্গে সরকারি স্তরে কথাবার্তা শুরু করে ওয়াশিংটন। কাবুলের তৎকালীন তালেবান সরকার কিন্তু তাতে সাড়া দেয়নি। এবং এর জেরেই আফগানিস্তানে সেনা পাঠায় আমেরিকা।

হোয়াইট হাউস সূত্রের খবর, ১৪ হাজার থেকে কমিয়ে এখন সেখানে ৭ হাজারের বেশি সেনা রাখতে চাইছেন না প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এ নিয়ে জঙ্গিরা সরাসরি মুখ না খুললেও, নাম গোপন রাখার শর্তে এক তালেবান কমান্ডার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, এত দিন তারা এটাই চেয়ে আসছিল। কাল তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লা মুজাহিদ যে বিবৃতি দিয়েছে, তাতে অবশ্য এই ‘খুশি’র লেশটুকুও নেই। উল্টে তাদের কটাক্ষ, ‘ইতিহাস থেকে এবার অন্তত আমেরিকার শিক্ষা নেওয়া উচিত। সোভিয়েত ইউনিয়ন যে ভাবে মুখ পুড়িয়েছিল, আশা করি গোটা দুনিয়ার সে কথা মনে আছে। ভয়ঙ্কর টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়েও আফগানরা যে বীরত্ব এবং সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন, তাদের আর না-ঘাঁটানোই ভাল। অন্যথায়, এর ফল ভুগতে হবে।’

যুদ্ধ নয়, জঙ্গিরা রাজনৈতিক সমাধান চাইছে। তালেবানের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমেরিকার সঙ্গে তারা অর্থনীতির আলোচনায় বসতে চায়। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি অন্য ছবিই দেখাচ্ছে। সম্প্রতি আবু ধাবিতে সরাসরি আলোচনা এড়িয়েছে জঙ্গিরা। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে থেকেই আফগানিস্তানে শান্তি ফেরানোর বার্তা দিয়ে আসছেন ট্রাম্প।

গত বছর আবার সেই অবস্থান থেকে পুরো ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে জানিয়েছিলেন, তালেবানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলবেই। তার পর সম্প্রতি, ফের ভোলবদল। এ মাসের মাঝামাঝি আফগানিস্তানে শান্তি প্রক্রিয়ায় মধ্যস্থতা করার জন্য পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে চিঠিও লিখেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ইমরান একটা দায়সারা উত্তর দিয়েছিলেন, ‘ক্ষমতার মধ্যে থেকে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব।’ তালেবান হুমকির মুখে এখন আমেরিকা কী করে, সেটাই দেখার। আনন্দবাজারের

No comments:

Post a Comment

Copyright © স্বাধীন নিউজ

Canvas By: Fauzi Blog Responsive By: Muslim Blog Seo By: Habib Blog