নির্যাতনের অভিযোগে আটক গৃহকর্ত্রী ও তাঁর দুই মেয়ে |
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লামিয়া আক্তার নামে ৯ বছরের এক এতিম শিশু অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে। শিশুটির সারা শরীরে দীর্ঘদিনের নির্যাতনের ক্ষত। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত গৃহকর্ত্রী নেহার সুলতানাকে দুই মেয়ে রুমানা আক্তার ও সুমাইয়া আক্তারসহ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নেহার সুলতানার স্বামী রমজান মিয়া পলাতক রয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশের এসআই মো. সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা করেছেন।
নির্যাতনের শিকার শিশু লামিয়া আক্তার ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার গোকর্ণঘাটের মো. কুদ্দুস মিয়ার মেয়ে। দুই বছর বয়সে লামিয়ার মা ও চার বছর বয়সে বাবা মারা যান। এরপর থেকে চাচা মো. রমজান মিয়ার মেড্ডা সিও অফিসসংলগ্ন বাড়িতে থাকত সে। সেখানেই দীর্ঘদিন ধরে সে নির্যাতনের শিকার হচ্ছিল।
পুলিশের উদ্ধার করা ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, শিশুটিকে বেত, জুতা ইত্যাদি দিয়ে পেটানো হতো। বলা হচ্ছে, ‘আরো মার, টিভিতে দেখা রেসলিংয়ের মতো মার।’ একজন নির্যাতন করত, আরেকজন তা ভিডিও করত বা ছবি তুলত।
শিশুটি পুলিশকে জানায়, তাকে দিয়ে ঘর মোছানো থেকে শুরু করে থালা-বাসন ধোয়াসহ বিভিন্ন কাজ করানো হতো। কাজের ত্রুটি ধরে তাকে প্রায়ই মারধর করত চাচা, চাচি ও চাচাতো বোনেরা। এমনকি গরম ছেঁকাও দেওয়া হতো।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ওসি (তদন্ত) মো. জিয়াউল হক জানান, শিশুটি দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে। তখন অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। পরে আজ (শুক্রবার) ভোরে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই শিশুসহ গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী শিশুটির বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত রমজান মিয়াকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
কালের কন্ঠ
No comments:
Post a Comment