আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী - ছবি : সংগ্রহ |
সেই মনোনয়নপত্রের সাথে তিনি যে হলফনামা দিয়েছেন সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, তার নিজ নামে ৩৯ শতাংশ জমি রয়েছে। যার মূল্য ৩২ হাজার টাকা (১৯৯০ সাল)। স্ত্রীর নামে পাঁচ দশমিক ২৮ একর জমি রয়েছে। যার মূল্য দুই কোটি টাকা। অকৃষি জমি এবং অর্জনকালীন সময়ে এক একর ৮৭ শতাংশ জমি রয়েছে। যার মূল্য ৬৫ লাখ টাকা। তার স্ত্রীর নামে ছয় শতাংশ এবং সাত শতাংশ জমি রয়েছে। কিন্তু লতিফ সিদ্দিকীর কোনো বাড়ি, দালান, অ্যাপার্টমেন্ট, আবাসিক ও বাণিজ্যিক কোনো ভবন নেই। তবে তার স্ত্রীর একটি বাড়ি রয়েছে। এ ছাড়া অপর একটি বাড়ি নির্মাণাধীন রয়েছে।
লতিফ সিদ্দিকীর হলফনামা থেকে জানা যায়, তার নামে কোনো বাড়ি, দালান, দোকান বা বাণিজ্যিক কোনো ভবন নেই। ব্যবসা থেকেও তার বার্ষিক কোনো আয় নেই। তবে পেশা (শিক্ষকতা, লেখক সম্মানী) থেকে লতিফ সিদ্দিকীর বার্ষিক আয় দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং অন্যান্য (ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত সুদ) ১৪ হাজার ৬৩৯ টাকা। লতিফ সিদ্দিকীর নিজ নামে নগদ অর্থ রয়েছে পাঁচ লাখ ৩৪ হাজার ৩৭৭ টাকা। তার স্ত্রী ও ছেলের নামে কোনো নগদ টাকা নেই। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ৯ লাখ ২৫ হাজার ৮৪৯ টাকা। এমপি কোটা থেকে তার একটি টয়োটা জিপ গাড়ির মূল্য ৬৫ লাখ টাকা। তার স্ত্রীর ২০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার রয়েছে। যার মূল্য ১০ হাজার টাকা (১৯৭৩ সালে বৈবাহিক সূত্রে প্রাপ্ত উপহার)। ইলেকট্রনিক সামগ্রীর মধ্যে ফ্রিজ ও টিভি রয়েছে। যার মূল্য ৭৫ হাজার টাকা। আসবাবপত্রের মধ্যে রয়েছে একটি সোফা, দুইটি খাট, ড্রেসিং ও ডাইনিং টেবিল রয়েছে, যার মূল্য ৫০ হাজার টাকা।
আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী কালিহাতী থেকে ১৯৭০ সালের আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য, ১৯৭৩, ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় লাভ করেন। ২০০৮ সালে জয়ী হওয়ার পর মন্ত্রী হন। সর্বশেষ ২০১৪ সালের নির্বাচনেও তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে টাঙ্গাইল সমিতি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে হজ, মহানবী সা: ও তাবলিগ জামায়াত এবং প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে কটূক্তি করেন। দেশে ও বিদেশে তাকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন ও ইসলামিক সংগঠনগুলো লতিফ সিদ্দিকীর বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করে। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন আদালতে ২২টি মামলা হয়। এর মধ্যে ১৭ মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পরে তিনি দেশে এসে আত্মসমর্পণ করেন। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন সেল থেকে জামিনে মুক্তি পান। দেশব্যাপী তুমুল আন্দোলনের মুখে তার মন্ত্রিত্ব কেড়ে নিয়ে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এরপর ২০১৭ সালের ৩১ জানুয়ারি তার আসনে উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারী এমপি নির্বাচিত হন। ওই উপনির্বাচনে লতিফ সিদ্দিকীর ভাই কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আব্দুল কাদের সিদ্দিকী নির্বাচন করতে মনোনয়নপত্র জমা দিলেও ঋণ খেলাপির কারণে তার প্রার্থিতা অযোগ্য ঘোষণা করেন উচ্চ আদালত।
নয়াদিগন্ত
No comments:
Post a Comment